• বুধবার ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ৩ ১৪৩১

  • || ১৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

টাঙ্গুয়ার হাওরে ফোকফেস্ট!

প্রকাশিত: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪  

‘মাটির গন্ধে ভাটির গান’ এই আবহে আগামী ১৩ থেকে ১৮ সেপ্টেম্বর সপ্তাহব্যাপী ‘টাঙ্গুয়ার হাওরে ফোকফেস্ট-২০২৪’ আয়োজন করতে চলেছে টাঙ্গুয়ার হাওরের নৌ-পর্যটন উদ্যোক্তারা। মাঝ হাওরে জলবেষ্টিত মঞ্চে আয়োজিত অভিনব এই উৎসবটি নৌকায় থেকে উপভোগের সুযোগ রয়েছে। উৎসব চলাকালীন সময়ে কেবল নিবন্ধিত হাউস বোটগুলোতে থাকা পর্যটকদের জন্যে উন্মুক্ত থাকছে আয়োজনটি।

স্থানীয় লোকসংগীত শিল্পী, নৌ পর্যটন কর্মীদের মাঝে থাকা লোকসংগীত ও যন্ত্রসংগীত শিল্পীদের নিয়ে এই আয়োজনে অন্যতম আকর্ষণ হিসেবে থাকছে জনপ্রিয় ব্যান্ডদল ‘কৃষ্ণপক্ষ’, ‘আপনঘর’, সোনার বাংলা সার্কাস ব্যান্ড এর প্রবর রিপন, সোহাগ শ্রাবণ ও ‘’দোতং পাহাড়’ গান খ্যাত সোহান আলী।

ঐতিহ্যগতভাবেই হাওর জনপদের ভাটি অঞ্চল বিখ্যাত লোকসঙ্গীতের সাম্রাজ্য হিসেবে পরিচিত। এই জল ও জোছনার ছোট্ট জনপদে মরমি সাধক হাসন রাজা, ধামাইল গানের জনক রাধারমণ দত্ত, বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিম, কাটা বিচ্ছেদি গানের জন্যে খ্যাত উকিল মুন্সী কিংবা দুরবিন শাহের আবির্ভাব হয়েছে।

বাউল সঙ্গীদের এই মুকুটহীন সম্রাটদের গানকে যারা কণ্ঠে ধারণ করেন আর অন্তরে লালন করে চলেছেন এমন লোকসংগীত শিল্পীদের সম্মিলনেই এই আয়োজন। মূলত হাওর পর্যটনের ২ দিন ১ রাতের প্যাকেজগুলোর সাথে মিল রেখেই ১৩ তারিখ সন্ধ্যা থেকে থেকে শুরু করে ১৪ তারিখ রাতের প্রথম প্রহর, ১৫ তারিখ সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়ে ১৬ তারিখের প্রথম প্রহর ও ১৭ তারিখ সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়ে ১৮ তারিখ রাতের প্রথম প্রহর পর্যন্ত তিনটি আলাদা পর্বে উদযাপিত হবে এ বছরের আয়োজন।

আয়োজকদের মধ্যে রয়েছে ‘জলের গান’, ‘তরী ময়ূরাক্ষী’ এবং ‘ফ্লোটিং হাউজ অফ টাঙ্গুয়া’ এছাড়াও এই আয়োজনে হসপিটালিটি পার্টনার হিসেবে থাকছে ‘মহাজনের নাও’, ‘ডোঙা’, জলপদ্ম, ফ্যান্টাসি অফ টাঙ্গুয়া’-সহ বেশ কিছু হাউস বোট। অনুষ্ঠানের মূল পর্ব আয়োজন হবে তাহিরপুর উপজেলার টেকেরঘাটের একটি ভাসমান রিজোর্ট ‘মেঘদূত’-এ।

এই আয়োজন সম্পর্কে ‘মহাজনের নাও’ এর মাসুক উর রহমান বলেন, ‘জল ও জ্যোছনার জনপদ খ্যাত ভাটি অঞ্চলে ১২ সেপ্টেম্বর বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিম-এর প্রয়াণ দিবস ও ১৭ সেপ্টেম্বর ভরা পুর্ণিমাকে সামনে রেখে লোকসংগীত, হাওর আর জ্যোছনা উদযাপনের মিশেলে পর্যটকদের এক অনন্য অভিজ্ঞতা দিতেই এই আয়োজন। প্রথমবারের মতো হতে চলা এই উৎসব নিয়মিত ভাবেই আয়োজন করা হবে।’

কেবল দর্শনীয় স্থান, মুখরোচক খাবার আর আকর্ষণীয় ও বিলাসবহুল হাউস বোটে করে নৌবিহারই নয়, হাওরকেন্দ্রিক পর্যটনের একটি বড় অনুষঙ্গ আমাদের ভাটিবাংলার লোকসংগীত। আবার বাঙালির প্রাণের অনুষঙ্গ আমাদের লোকগানের অফুরান ভাণ্ডার। এই মনের খোড়াকের দুইটি অনুষঙ্গকে আনুষ্ঠানিক রূপ দিতেই এই আয়োজন। এতে যেমন ভাটি বাংলার লোকগানের শুদ্ধ চর্চার প্রসার ঘটবে, তেমনি সাংস্কৃতিক পর্যটনের এক নতুন দুয়ার খুলে যাবে হাওরকেন্দ্রিক পর্যটনে, এমন লক্ষ্যেই এই আয়োজন বলে জানান এই লোকসংগীত উৎসবের উদ্যোক্তারা।

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –